মো: সাগর হোসেন,বার্তা সম্পাদক: যদি হয় রক্ত দাতা – জয় করবো মানবতা এমন স্লোগান নিয়ে এগিয়ে চলছে আব্দুর রহমান সুমন এর প্রতিষ্ঠিতো যশোরিয়ান ব্লাড ফাউন্ডেশন । এক ঝাঁক তরুন সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় এই সংগঠনটি। যশোরিয়ান ব্লাড ফাউন্ডেশন শুরু থেকে আজ পযর্ন্ত মাত্র ২১ দিনে ৩৮ জন রোগীকে রক্ত দিতে সক্ষম হয়েছে। সংগঠনটি আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে শুক্রবার ২০/০৮/২০২১ তারিখ বিকাল তিনটায় সংগঠনের সদস্যদের মাঝে আইডি কার্ড ও ফিতা প্রদান সহ সংগঠনটি আরো অগ্রগতি করার জন্য বিভিন্ন দিক নিদের্শনা প্রদান করেন।
পৃথিবীতে সকল ধর্মেই মুমূর্ষুকে দানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই দান যদি হয় রক্ত, তবে তার মহত্ব ছাড়িয়ে যায় অন্য সব কিছুকে।
কারণ একজনের দান করা রক্ত বাঁচাতে পারে অন্যের জীবন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তার বাণীতে বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ তার অপর ভাইয়ের উপকার করতে সক্ষম হলে সে যেন তা করে (মুসলিম)। ’
কিন্তু আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও প্রয়োজনের তুলনায় রক্তের সরবরাহ কম। এখনও প্রতিবছর অনেক রোগী রক্তের অভাবে মারা যায়। এর কারণ এ সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা ও অমূলক কুসংস্কার। তাই রক্তদান সম্পর্কে আমাদের সকলের খুঁটিনাটি জানা অত্যন্ত জরুরি।
কেন স্বেচ্ছায় রক্তদান করবেন:
আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় ১০/১২ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। আর এই প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ হয় খুবই সামান্য। আর যতটুকু সরবরাহের ব্যবস্থা হয় তার ৬০ ভাগই পূরণ হয় পেশাদার রক্তদাতাদের কাছ থেকে, পেশাদার রক্তদাতাদের কাছ থেকে রক্ত গ্রহণ একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে তেমনি অস্বাস্থ্যকর। কারণ পেশাদার রক্তদাতারা গ্রহণ করে বিভিন্ন ড্রাগ এবং শরীরে বহন করে হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, এইডস, সিফিলিস এর মত জীবন ধ্বংসকারী বিভিন্ন রোগের জীবাণু।
রক্তদানের যোগ্যতা:
১. বয়স ১৮ থেকে ৫৭ বছরের মধ্যে হতে হবে (নারী ও পুরুষ)।
২. ওজন ৪৮ কেজি (পুরুষ) ৪৫ কেজি (নারী)।
৩. সময় ১২০ দিন পর পর অর্থাৎ ৪ মাস পর পর।
৪. শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
রক্তদান আমাদের ভুলগুলো:
রক্তদান করলে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়া, শরীর মুটিয়ে যাওয়া, শরীর শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের ভুল ধারণা মানুষের মধ্যে কাজ করে, যার পুরোটাই আমাদের রক্তদান সম্পর্কে অসচেতনতা ও ভয় থেকে সৃষ্টি। রক্তদান করলে শারীরিকভাবে কোন সমস্যার সৃষ্টি বা অসুস্থ হওয়া এর কোনটাই হয় না। বরং রক্তদান করলে শারীরিকভাবে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়, মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায় যা অন্য কোন ভাবে মানুষের উপকারের মাধ্যমে অর্জন সম্ভব নয়।
রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয় এবং রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকার জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।
বছরে ৩ বার রক্তদান আপনার শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলার সাথে সাথে নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়িয়ে দেয়।উল্লেখ্য রক্তদান করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়।
নিয়মিত রক্তদান করলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
গবেষণায় পাওয়া গেছে যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীরে বড় রোগ আছে কিনা তা বিনা খরচে জানা যায়।
প্রতি পাইন্ট (এক গ্যালনের আট ভাগের এক ভাগ) রক্ত দিলে ৬৫০ ক্যালরি করে শক্তি খরচ হয়। অর্থাৎ ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
যশোরিয়ান ব্লাড ফাউন্ডেশন, মুমূর্ষু রোগীর জন্য সরবরাহ করছে বছরের প্রয়োজনীয় রক্তের চাহিদার সিংহভাগ। বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় অনুষ্ঠান আয়োজন করার প্রস্ততি করছে। সকল ধরণের মানুষকে -তার নিজ রক্তের গ্রুপ জানানোর জন্য।এই স্বপ্নযাত্রায়, যশোরিয়ান ব্লাড ফাউন্ডেশন মানুষকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে , তাদের রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করবে এবং বিনামূল্যে সরবরাহ করবে।
যশোর জেলার মধ্যে রক্তের প্রয়োজন হলে বিনামূল্য রক্ত পেতে যোগাযোগ:
ফেসবুক: যশোরিয়ান ব্লাড ফাউন্ডেশন
মোবাইল: ০১৪০২-৯৫৩৫২০
স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ বিঃদ্রঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষামান।