বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়েই আমরা লাভ করেছি স্বাধীন দেশ, নিজস্ব পতাকা। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলার ছাত্র-যুবক, কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণ বর্বর হানাদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তারই পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে খোদিত হয় একটা নাম- ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ’। মহান স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উদযাপন উপলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে সভাপতি হিসাবে কথাগুলো বলেন মেয়র লিটন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার সময় বেনাপোল পৌরসভার আয়োজনে পৌর বিয়ে বাড়িতে (কমিনিউটি সেন্টার) মহানস্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উদযাপন উপলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে সভাপতি হিসাবে মেয়র লিটন বলেন, ১৯৭১ সালে যারা অস্ত্র হাতে সরাসরি পাকিস্তানি বাহনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন কেবল তাদেরই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গন্য করা হয়।সেই সঙ্গে অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী, সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ত্রাণ বিতরণসহ যাঁরা বিভিন্ন সেবামূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তারা, কোলকাতায় স্থাপিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পরিচালকমণ্ডলী, সাংবাদিক, ভাষ্যকার ও শিল্পী, প্রমুখকেও মুক্তিযোদ্ধা হিসাব তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে যারা অস্ত্র হাতে মাঠ পর্যায়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তাদের কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, ইপিআর, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর নিয়মিত সদস্যবৃন্দ। এরা আগে থেকেই অস্ত্র ব্যবহারে এনমকী সম্মুখ সমরাভিযানে প্রশিতি ছিলেন। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এরা পাকিস্তানের প ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলেন। এদের অধিকাংশই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ‘নিয়মিত বাহিনী’র সদস্য ছিলেন। সাধারণ মানুষ যাঁরা বাংলাদশে ত্যাগ করে ভারতে গিয়েছিলেন এবং ভারতের প্রশিণ ক্যাম্পে অস্ত্রচালনা, বিস্ফোরকদ্রব্যের ব্যবহার ও গেরিলাযুদ্ধের কলাকৌশলে প্রশিণ লাভের পর দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেগুলো ব্যবহার করেছিলেন। সংখ্যাই এরাই সর্বার্ধিক। এদের বলা হতো ‘গণবাহিনী’। সামরিক প্রশিণের পরই এদের হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিলেন কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র সহ সমাজের নানা স্তরের মানুষ।কেবল ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে নতুনভাবে ভারতে প্রশিণ নিয়েছেন, কিন্তু দেশাভ্যন্তরে না-ফিরে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, সেই স্বাধীনতা কামি মুক্তিযোদ্ধা বাবারা যখন এদেশ স্বাধীন করার পর অর্থের অভাবে রিক্সা ভ্যান রাস্তায় জুতার কালি পর্যন্ত করেছিল কিন্ত তাদের আমরা সঠিক মুল্যায়ন করি নাই। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ মতায় আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা বাবাদের ভাতা প্রদান শুরু করেন। তাদের সন্মমনা প্রদান করেন। আজ আমরা যে আলাদা লাল সবুজের পতাকা আলাদা ভুখন্ডে মুক্ত বাতাস মুক্ত অক্সিজেন নিতে পারছি তা এই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিতে পারছি। তাদের ঋন শোধ হবার নয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য আহসান উল্লাহ মাষ্টার, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার, যশোর এর প্রকৌশলী হোসাইন শওকত আলী, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা, বেনাপোল পৌর প্যানেল মেয়র সাহাবুদ্দিন মন্টু, বেনাপোল পৌর কাউন্সিলার রাশেদ আলী, কামরুন্নাহার আন্না, জুলেখা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা শাহ-আলম, দ্বীন ইসলাম মল্লিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যশোর জেলা আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের কার্যনির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন আলম।
স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ বিঃদ্রঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষামান।