বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে কোনো ধরনের আয়-রোজগার বা কাজ না পেয়ে পথে পথে ভিা করছেন নিঃস্ব ও হতদরিদ্ররা। তারা এখন গ্রাম থেকে শহরমুখী হচ্ছেন ভিাবৃত্তিতে। লকডাউনের আগে বেনাপোলে ভিুকের উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু এখন চারদিকে ভিুকের হাহাকার। পথে পথে মানুষ বসে আছেন ভিা আর ত্রাণের অপোয়। স্থল বন্দর বেনাপোলে আশঙ্কজনক হারে বাড়ছে ভিুকের সংখ্যা। বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে এখন ভিা করছেন বলে জানা গেছে।
এ সম্পর্কে বেনাপোল চেকপোষ্টে দৌলতপুর গ্রামের সেলিম হোসেন বলেন, লকডাউনে সারা দেশেই ভিুক বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে ভিুক আরও বাড়বে। এসংখ্যা নিরুপন করা না গেলেও এর উত্তরনে কর্মসংস্থান বাড়তে হবে।এ উদ্যেগ সরকার ও বিত্তবানদের নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
বড়আচড়া গ্রামের মাসুদুর রহমান বলেন, মহামারী করোনাভাইরাস উদ্দেড় উৎকন্ঠা এবং শঙ্কা বাড়িয়েছে। পৃথিবী জুড়ে নজীরবিহীন উৎপাদন বন্ধ। এটি দিন আনা দিন খাওয়া সঞ্চয়হীন মানুষের বড় ধরনের আয় কমিয়েছে। এই আপৎকালীন সময়ে সর্বজনীন আয়-সহায়তা ও কর্মসংস্থান ধরে রাখা এবং খাদ্য-সহায়তা নিশ্চিত না করতে পারলে সামনে স্থিতিশীলতায় বড় রকমের টান পড়বে।
বেনাপোল শহরে আগে দেখা যেত সাধারণত বৃদ্ধ মানুষরা ভিাবৃত্তি করত। এখন দেখা যাচ্ছে মধ্যেবয়সী এবং যুবতী ও কিশোরী মেয়েদের ভিা করতে। আগে মধ্যে বয়সী নারীরা শ্রমিকের কাজ করত। এখন তারা নেমেছে দোকানে দোকানে অফিস আদালতে ভিা করতে। বিভিন্ন কর্মত্রে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ছেলে মেয়ের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছে এ পেশা। সম্প্রতি ১৮ থেকে ২২ বছর এর মেয়েদের ভিা করতে দেখা যাচ্ছে। এদের কারো কারো কোলে আবার শিশু বাচ্চা ও রয়েছে। এরা নিজ এলাকায় এ পেশায় নিয়োজিত হতে পারবে না বলে তারা ভীড় জমিয়েছে সীমান্ত শহর বেনাপোলে।
কথা হয় ঢাকা থেকে আসা সীমলা নামে এক ২০ বছরের মেয়ের সাথে। সে বেনাপোলের রেল ষ্টেশন এলাকায় তার মাকে নিয়ে থাকে ভাড়া। তারা মা মেয়ে দুইজনেই স্বামী পরিত্যাক্তা। অভাব অনটনের জন্য ঢাকা থেকে এসেছে বেনাপোল । উপায়ন্তর না দেখে পেটের জ্বালায় তারা নেমেছে ভিাবৃত্তিতে। তাকে কাজের কথা বললে সে বলে আমার ছোট বাচ্চা এ নিয়ে কি ভাবে কাজ করব। তার মা কি করে জানতে চাইলে বলে একই কাজ করে।
এছাড়া সীমান্তের এই শহরে নতুন নতুন অনেক প্রতবন্ধী ও এসেছে। তারাও সারাদিন তাদের চলার জন্য বেতন ভুক্ত করে আবার লোক রেখেছে। এই ভাবে চলছে ভিাবৃত্তি। আর দিন দিন বেড়ে চলেছে ভিুকের সংখ্যা।
খুলনার বৈঠেঘাটা থেকে আসা জামেনা বেগম বলেন, নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সর্বোপরি করোনা মহামারির কারনে চরম বিপর্যয়ের মুখে এসেছি বেনাপোল শহরে। ইচ্ছা ছিল কাজ করতে ভারত চলে যাব। সীমান্ত কড়াকড়ির কারনে যেতে না পেরে এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে বেনাপোলে মানবতার দিন যাপন করছি বেশ কয়েকদিন। পেটের জ্বালায় বাধ্য হয়ে এখন ভিা করতে হচ্ছে লোকের দরজায় দরজায়।
দৈনিক সংগ্রামের বেনাপোল প্রতিনিধি মশিয়ার রহমান বলেন, ইদানিং ভিুকের উপদ্রপ বেড়ে গেছে। এরা দলবদ্ধ হয়ে এখন ভিাবৃত্তি করছে। প্রতি পাঁচমিনিট পর পর আসে এরা। যতন টাকা না দেওয়া হয় ততন এরা দাঁড়িয়ে থাকে। অনেকে আবার দুই টাকা দিলে ভিা নিতে রাজী হয়না। আবার যে দেয় তাকে বেশী কথাও বলে।
স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ বিঃদ্রঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষামান।