নাহিদ পারভেজ , বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
শত বাধ, বিপত্তি, অভাব, অনটনকে অতিক্রম করে আজ শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে নাছির উদ্দিন নামে এক যুবক। সে বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের বুধ সর্দারের ছেলে। আজ সে লেখা পড়া না শিখেও নিজ বুদ্ধি বিবেক দিয়ে পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করেছে। যার মাসে আয় ১০ লক্ষ টাকা। সে মাত্র ২০ বছর বয়স থেকে গরু লালন পালন করে আজ বড় বড় কয়েকটি গরু , ছাগল, দুম্বা ভেড়া, গাড়ল ও মহিষের খামার করেছে। সাথে তার আছে ২৬ বিঘা জমির উপর একটি বৃহৎ আমবাগান। এছাড়া সে এই গরুর খামার থেকে আয় করে জমি ক্রয় করে সেখানে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে। আজ তার খামার সহ অন্যান্য ব্যবসা বানিজ্য দেখার জন্য চাকুরী দিয়েছে শতাধিক লোকের। যাদের বেতন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
৩৫ বছরের সাদা সিধা যুবক নাছির উদ্দিন বলেন, আজ আমার পরিশ্রমের ফলে এ সাফলতা অর্জন করেছি। আমি বাবার অভাব অনটনের জন্য লেখা পড়া শিখতে পারি নাই। ৬ ভাই এক বোন ও বাবা মা মিলে বড় সংসার আমাদের। তাই পণ করলাম লেখা পড়া না শিখেও জীবনে সফলতা আনা যায়। প্রথমে ২০০৪ সালে আমি বাবার সামান্য জমি বিক্রির টাকা নিয়ে ছোট ছোট ১০ টি গরু নিয়ে বাড়িতে প্রতিপালন করি। এক বছরের মধ্যে আমার ভাগ্যে খুলে যায় । ওই গরু থেকে যা মুনাফা পাই তাতে পরবর্তী বছর আবার ছোট ছোট ২০ টি গরু ক্রয় করে কোরবানির সময় বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করি। এর পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাড়িতে গরু লালন পালন করে আমি প্রায় ৭৫ টি গরুর মালিক হই। আর তখনি আমি গরুর জন্য একটি জায়গা ক্রয় করে সেখানে গ্রামের আরো ২-৪ জনকে নিয়ে পরিশ্রম করতে থাকি। এখন আমার খামারে প্রতিবছর তিন থেকে ৪ শত গরু লালন পালন করা হয়। আমার বড় দুটি খামার আছে। এ বছর আমি ৫ শত গরু পালব। যা কোরবানির ঈদের সময় বিক্রি করব। গরু ছাড়া আমি মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ও গাড়ল ও লালন পালন করি। বর্তমানে আমার খামারে রয়েছে গরু ৮৫ টি মহিষ, ৭০ টি ভেড়া, ৫০ টি গাড়ল, ৬০ টি ভেড়া, ভারতীয় রাজস্থানের উন্নত জাতের ছাগল ২০০ টি ও ৭৫ টি গাভী গরু। প্রতিদিন আমার খামার থেকে প্রায় ৮শত লিটার দুধ উৎপন্ন হয়। গেল কোরবানীর ঈদের সময় আমি ৪ শত গরু ১৫০ টি ছাগল ১০০ টি ভেড়া ও গাড়ল এবং ৬টি দুম্বা থেকে সকল খরছ বাদ দিয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করেছি। আমি এ টাকা দিয়ে আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি খামারে শুধু গরু থাকবে ৫ শত। এছাড়া আমার একটি বড় আমবাগান রয়েছে যা থেকে প্রতিবছর ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা আয় হয়। সব মিলে আমার মাসে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আয় আছে। আমি এলাকার গরীব দুখি মানুষের কথা ভেবে খামার বেশী বড় করছি যাতে আরো লোকের কর্মসংস্থান হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আপনাকে নিয়ে লেখা হয়েছে আপনি চোরাচালানি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত, এমন প্রশ্নের জবাবে নাছির উদ্দিন বলেন আমার গ্রামে শুনে দেখেন আমি কিসের সাথে সম্পৃক্ত। আমার সারাদিন যায় গুরু ছাগল ও ফসলি জমি দেখতে। আমার কাছে কোরবারিন সময় কিছু লোক চাঁদা চেয়েছিল। আমি তা দিতে রাজী না হওয়ায় ওই ব্যাক্তিরা ঈর্ষাম্বিত হয়ে এসব কাজ করে থাকতে পারে।
নাছির উদ্দিনের খামারের ম্যানেজার আলামিন বলেন, আমরা ভারত ঘেষা সীমান্তঞ্চলে বসবাস করি। এখানে কোন শিল্প কারখানা নাই। নাছির ভাই তার বুদ্ধি মেধা দিয়ে যদি আজ এ খামার না করত তাহলে আমরা বেকার হয়ে যেতাম। আমাদের অনেকে হয়ত খারাপ কাজের সাথে যুক্ত হয়ে যেত। আপনারা আমাদের পরিশ্রমের সফলতা তুলে ধরেন। যাতে বেকার যুবকরা এই ভাবে গরু লালন পালন করে বড় হতে পারে। শুধু শুধু যারা অপবাদ ছড়ায় তাদের চোখে ভাল কিছু ধরা পড়ে না। তিনি আরো বলেন নাছির উদ্দিনরা ৬ ভাই আজ গরুর খামার করে স্বাবলম্বী। এবং তার দেখা দেখি আরো লোক গরুর খামার করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ইউনিয়নে নাছিরের সফলতা দেখে প্রায় ২ শতাদিক গরুর খামার তৈরী হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে নাছির উদ্দিনের গরুর খাটালে গরু লালন পালন চলছে সন্তান স্নেহে গরুর মাথার উপর ঘুরছে ইলেকট্রিক ফ্যান। কেউ মেশিন চালিয়ে পানি দিয়ে গোবর পরিস্কার করছে। কেউ গরু ও মহিষকে গোছল করাতে ব্যাস্ত, কেউ তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও ঔষুধ দিচ্ছে।
Acheter Cialis Original Viagra Italiano Buy Online Amoxicillin Cialis Viagra Radio Commercial 1 Mg Finasteride Cheap Propecia